top of page
Search
Writer's pictureLearn Today for TET

Topic - সংগতিবিধান বা অভিযোজন (Adjustment)

Updated: Aug 17, 2023

সংগতিবিধান বা অভিযোজন (Adjustment) শব্দটি জৈবিক শব্দ Adaptation থেকে এসেছে। জৈববিশারদগণ ‘অভিব্যক্তি শব্দটি বিশেষভাবে বাহ্যিক পরিবেশগত চাহিদার ক্ষেত্রেই ব্যবহার করেছেন। মনস্তত্ত্ববিদগণ সংগতিবিধান বা অভিযোজনকে সামাজিক এবং ব্যক্তিগত চাহিদাপূরণের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করে থাকেন। অর্থাৎ সংগতিবিধানের তিনটি দিক বা মাত্রা আছে-
  • বাহ্যিক পরিবেশন চাহিদাপূরণ,

  • সামাজিক চাহিদাপূরণ এবং

  • ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ চাহিদাপূরণ।

বাহ্যিক পরিবেশগত চাহিদা বলতে প্রধানত বোঝায় ধরি যে ভৌগোলিক অবস্থানে বাস করে সেখানকার পারিপার্শ্বিক চাহিদা। এ ব্যাপারে চার্লস ডারউইন-এর বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করা যেতে পারে—“যোগ্যতমরাই বেঁচে থাকে" (Survival of the fittest)।
ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছা, কামনা-বাসনা, সামাজিক প্রত্যাশা পরিপূরণ ব্যক্তির সংগতিবিধানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এইসব চাহিদা ব্যক্তির মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে যার প্রতিকার হল সংগতিবিধান বা অভিযোজন। চাহিদাগুলি পূরণের জন্য ব্যক্তিকে সক্রিয় হতে হয়। এই সক্রিয় হওয়া এবং তার ফলশ্রুতিই হল সংগতিবিধানের মূল বিষয়।
শৈশব থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত ব্যক্তির জীবনে অগণিত চাহিদা দেখা যায়। যার মধ্যে কিছু চাহিদা, যেমন—ভালোবাসার চাহিদা, আত্মরক্ষার চাহিদা ইত্যাদি ব্যক্তিগত আর অধিকাংশ চাহিদাই সমাজ-পরিবেশ নিয়ন্ত্রিত। এই চাহিদার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়াই হল সংগতিবিধান। এইভাবে ব্যক্তিগত ও সামাজিক চাহিদাসমূহের পরিপূরণের মধ্য দিয়ে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকশিত হয়।
তাই এককথায় বলা যায় সংগতিবিধান বা অভিযোজন হল ত্রিবিধ চাহিদার (বাহ্যিক পরিবেশগত চাহিদা, সামাজিক চাহিদা ও মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা) একটি সমন্বিত রূপ, যা ব্যক্তির সুসংহত ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করে।

অভিযোজনের ধারণা
(Concept of Adjustment)
অভিযোজন হল একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তি পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
এটি বাহ্যিক পরিবর্তনের সাথে ব্যক্তিকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে ।
চাহিদার অভিযোজনের মাধ্যমে সন্তুষ্টি ঘটে এবং ব্যক্তি কোন হতাশা অনুভব করে না বা দ্বন্দ্বের সম্মুখীন হয় না।

অভিযোজনের সংজ্ঞা

(Definition of Adjustment)


Vonhaller -
We can think of adjustment as psychological survival in much the same way as biologist uses the term adaptation to describe physiological survival.
অর্থাৎ বলা যায়, যেভাবে জীববিজ্ঞানীদের মত অনুসারে, একটি জীব বা প্রজাতিকে শারীরিক দৃষ্টিকোণ থেকে জীবিত রাখতে অভিযোজন শব্দটি ব্যবহার করা হয় ; সেভাবেই মনস্তাত্ত্বিক ক্ষেত্রে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমরা অভিযোজন (Adaptation) শব্দটি ব্যবহার করা হয় ।
সংজ্ঞাটি ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব থেকে অনুপ্রাণিত। ডারউইন বলেছিলেন যে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযুক্ত জীবগুলিই শুধুমাত্র বেঁচে থাকে। তাই যে সমস্ত ব্যক্তিরা তাদের পরিবেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম তারা সুখী জীবনযাপন করতে পারে। এইভাবে, একটি মনস্তাত্ত্বিক শব্দ হিসাবে অভিযোজন হল জৈবিক জগতে ব্যবহৃত অভিযোজন শব্দটির প্রতিফলন।
সংগতিবিধান বা অভিযোজন বলতে দৈনন্দিন জীবনের চাহিদাগুলির সাথে একটি সন্তোষজনক ভাবে মানিয়ে চলাকে বোঝায়।

Shaffer -
Adjustment is the process by which living organism maintains a balance between its need and the circumstances that influence the satisfaction of these needs.
অর্থাৎ বলা যায়, অভিযোজন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি জীব তার চাওয়া এবং পাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। চাহিদার সন্তুষ্টি সম্পর্কিত পরিস্থিতিতে ভারসাম্য বজায় রাখে।

শ্যাফারের সংজ্ঞা চাহিদা এবং তাদের সন্তুষ্টির উপর গুরুত্ব দেয়।
  • একজন ব্যক্তি তার চাহিদার পরিতৃপ্তি বা পরিতৃপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সংগতি অনুভব করে।

  • একজন ব্যক্তি তার চাহিদা পূরণের অসুবিধাগুলি কাটিয়ে উঠতে তার পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করে।

  • কখনও কখনও সে তার চাহিদার পরিমাণ কমিয়ে দেয় যাতে সে প্রয়োজনের সীমিত সম্পদের মধ্যে সন্তুষ্ট বোধ করতে পারে এবং এইভাবে সে তার চাহিদা এবং এই চাহিদার সন্তুষ্টি উপলব্ধি করার ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে।

  • যতক্ষণ ভারসাম্য বজায় থাকে ততক্ষণ তিনি অভিযোজন করেন। যে মুহুর্তে তিনি বিরক্ত হন, তখনি তিনি অসঙ্গতির দিকে ধাবিত হন।

Gates, Jerslid and others -
Adjustment is a continual process by which a person varies his behaviour to produce a more harmonious relationship between himself and environment.
অর্থাৎ বলা যায়, অভিযোজন হল একটি চলমান (ক্রমাগত) প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার আচরণকে এমনভাবে পরিবর্তন করে যে তাকে তার নিজের এবং তার পরিবেশের মধ্যে আরও মধুর সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে।
একজন মানুষ এবং তার পরিবেশের মধ্যে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্কের সংকেত হিসাবে সমন্বয় বা অভিযোজনকে উল্লেখ করা যায় । আমরা নিজেদেরকে পরিবেশের নির্দিষ্ট চাহিদা অনুসারে মানিয়ে নেওয়ার জন্য কিছু উপায়ে নিজেদেরকে পরিবর্তন করি ।
উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি শহুরে মেয়েকে একটি গ্রামের ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়া হয় এবং একটি গ্রাম্য জীবন যাপন করতে হয়, তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য তাকে তার আচরণ, তার অভ্যাস এবং তার জীবনধারা পরিবর্তন করতে হয়

উপরের আলোচনা থেকে বলা যেতে পারে:
অভিযোজন বা সংগতিবিধান এমন একটি প্রক্রিয়া যা ব্যক্তিকে সুখী এবং সন্তুষ্ট জীবনযাপন প্রদান করে।
- অভিযোজন বা সংহতিবিধান ব্যক্তির চাহিদা এবং চাহিদা পূরণের ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- অভিযোজন বা সংগতিবিধান পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী ব্যক্তির জীবনধারা পরিবর্তন করতে প্রভাবিত করে।
- অভিযোজন বা সংহতি বিধান ব্যক্তির পরিবেশ পরিস্থিতিতে পছন্দসই পরিবর্তন আনতে ক্ষমতা প্রদান করে।
- একজন ব্যক্তির কাছথেকে মৌলিক চাহিদার দাবি ছাড়াও, সমাজ তার থেকে আচরণের একটি বিশেষ পদ্ধতির দাবি করে। যদি কেউ নিজের সমাজের রীতিনীতি, নৈতিকতা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে একপাশে রেখে শুধুমাত্র নিজের প্রয়োজন মেটাতে চিন্তা করে, তবে সে তার পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারবে না।
- এখানে সংগতিবিধানের জন্য সংস্কৃতি এবং সমাজের প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্যতার প্রয়োজন হয়।
- এইভাবে, অভিযোজন শুধুমাত্র ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটে না, সমাজের চাহিদাও পূরণ করে।
অতএব,

অভিযোজন বা সঙ্গতিবিধান হল এমন একটি শর্ত বা অবস্থা যেখানে কোন ব্যক্তি অনুভব করতে পারে যে, তার চাহিদা পূরণ হয়েছে (বা হবে) এবং এমন ব্যক্তির আচরণ , সমাজ ও সংস্কৃতির প্রয়োজনীয়তার সাথে সম্পর্কিত।

সু-অভিযোজিত ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য:

  • পরিবেশ ও পরিস্থিতি আলোচনায় ব্যক্তিবর্গের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ সম্পর্কে জ্ঞান বর্তমান থাকে।

  • শারীরিক, মানসিক, আবেগগতভাবে বিভিন্ন বিষয় বা পরিস্থিতির সাথে অভিযোজন বা অ্যাডজাস্টমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ।

  • আত্মবিশ্বাস এবং আত্মতৃপ্তি আসে অভিযোজন এর মাধ্যমে।

  • নিজের শক্তি এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতনতা দেখা যায়।

  • আচরণের নমনীয়তা আসে।

  • ভারসাম্যপূর্ণ, সমন্বিত আচরণ এবং সমন্বিত ব্যক্তিত্বের প্রকাশ দেখা যায় অভিযোজন এর ক্ষেত্রে।

  • সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তৈরি হয়।

  • বাস্তবতা গ্রহণ করার ক্ষমতা তৈরি হয়।

  • পর্যাপ্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষার অধিকারী হয়।

  • মৌলিক চাহিদার সন্তুষ্টি ঘটে।

  • সমালোচনামূলক বা দোষ-সন্ধানী মনোভাবের অধিকারী হয় না।

  • অপরিচিত পরিস্থিতির সাথে লড়াই করতে ক্ষমতা থাকে।

  • সঠিক জীবন দর্শনের অধিকারী হয়।










Class Note Download


524 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating
bottom of page